November 2, 2024, 6:20 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
ফেসবুক ভিডিওতে হেফাজত নেতা মামুনুলের গুণকীর্তন ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে চাকুরীচ্যুত হওয়া কুষ্টিয়ার সেই পুলিশ এএসআই গোলাম রাব্বানী এখন রাস্তায় রাস্তায় হ্যান্ড মাইক নিয়ে বক্তৃৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এবারের বক্তৃতায় তিনি র্যাব-পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। তিনি বলেন র্যাব পুলিশের বিরুদ্ধেও নানা হুমকি দেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্ততৃা করেন। দেশের ইসলামী আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে তিনি জীবন দিতে প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে জানান। এমনকি তার স্ত্রী, পুত্র-কন্যা সব বিসর্জন দিবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরে দাঁড়িয়ে তিনি হ্যান্ডমাইকে প্রায় ৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ড বক্তৃতা করেন। এসময় অসংখ্য উৎসুক জনতা তাকে ঘিরে ধরে তার বক্তব্য শুনেন। (এমন একটি ভিডিও দৈনিক কুষ্টিয়ার হাতে রয়েছে।)
এসময় সাদা পোশাকে বেশ ককেজন পুলিশ সদস্যকে দেখা দেয়া যায় তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন কিন্তু তিনি তার বক্তৃতা চালিয়ে যান। তিনি তার বক্তব্য লাইভ করার জন্য সবাইকে আহবান জানান।
এসময় তিনি একজন পুলিশ সদস্যের সাথে তর্ক বির্তক করেন।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানান গেছে, ৫ এপ্রিল পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় গোলাম রাব্বানীকে ফেসবুক ভিডিওতে বলতে দেখা যায়। তিনি সেই ভিযিওতে বলেন মামুনুল হক হুজুরের একটি ভিডিও দেখলাম। যে ভিডিওতে দেখা যায়, স্ত্রীকে নিয়ে একটা রিসোর্টে গেছেন তিনি। অধিকাংশ সাংবাদিক সেখানে চিল্লাপাল্লা করে তার কাবিননামা দেখতে চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন- সাংবাদিককে এই অধিকার কে দিয়েছে। আপনি যে কাবিননামা দেখবেন, আপনাকে এই অধিকার কি রাষ্ট্র দিয়েছে? আমি তো পুলিশের চাকরি করি, আমার জানা নাই। ভন্ডামির একটা সীমা আছে। যদি স্ত্রী ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়ে যেত, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতো। মিডিয়ার মাধ্যমে এমন একটা আলেম মানুষকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি কুষ্টিয়া পুলিশের ইন-সার্ভিস সেন্টারে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনার পর কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ রব্বানীকে কুষ্টিয়ার ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রত্যাহার করে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম বুধবার দুপুরে বলেন রব্বানী তাকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সামনে এসে তার জায়গা থেকে একটু সড়বেন না বলে জানান। তিনি সঠিক বক্তব্য দিয়েছেন বলে দাবি করেন। পুলিশ সুপার আরও জানান পুলিশ একটি ডিসিপ্লিন্ড সংস্থা। নির্দ্দিষ্ট নিয়মে এ বাহিনীকে চলতে হয়। সেখানে রব্বানী এই ধরনের বাহিনীতে থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছন।
তিনি জানান নানাভাবে রব্বানীকে শৃঙ্খায় আনার চেষ্টা ব্যর্থ হলে তাকে গত ৬ মে স্থায়ীভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়। চাকুরীচ্যুতির পর থেকে তিনি কুষ্টিয়াতেই তার বন্ধুবান্ধবদের কাছে ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান তিনি বর্তমানে জেলা পুলিশের নজরে রয়েছেন। দিনাজপুরে তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে। সেখান থেকে পরিাবরের সদস্যরা এলে তাদের কাছে রব্বানীকে হস্তান্তর করে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply